বিপিএলে জয়ের আনন্দে উন্মাতাল কুমিল্লা। নেচে গেয়ে সমর্থকরা মাতিয়ে তোলেছেন কুমিল্লার পুরো শহর। অন্য সব রাতের তুলনায় রাতটা একটু আলাদা ছিল কুমিল্লা সমর্থকদের জন্য। কেননা শুক্রবার ছিল বিপিএলের ফাইনাল খেলা।
ফাইনাল হলো ঠিক ফাইনালের মতোই। দুই দলের লড়াই হলো একদম শেষ বল পর্যন্ত। শেষ বলে জয়ের জন্য ফরচুন বরিশালকে করতে হতো ৩ রান। কিন্তু মাত্র ১ রান নিতে পেরেছেন স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়। যার ফলে মাত্র ১ রানের জয়ে তৃতীয়বারের মতো বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
আগে ব্যাট করে কুমিল্লার সংগ্রহ ছিল ১৫১ রান। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ২৩ বলে ৫৭ রান করেছিলেন সুনিল নারিন। বিপরীতে পুরো ২০ ওভার খেলে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫০ রানে থেমেছে বরিশালের ইনিংস। বল হাতেও ৪ ওভারে মাত্র ১৫ রানে ২ উইকেট নিয়ে কুমিল্লার জয়ের নায়ক সুনিল নারিন।
কুমিল্লার পুরো শহরেই জুড়ে ক্রিকেট ভক্তদের হৈই হুল্লোড়। মনে হচ্ছে আবেগের আত্মহারা হলেতো আর দোষ দেয়া যায়না এই ক্রিকেট পাগল মানুষগুলোকে। উচ্ছ্বাসে-উদ্দীপনায় উন্মাতাল অগণিত ক্রিকেটামোদি পথে নেমেছিল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই। বসন্তের দমকা বাতাসের মতোই তরুণের দল পতাকা উড়িয়ে ছুটেছে কুমিল্লা শহরের প্রানকেন্দ্র কুমিল্লার কান্দিরপাড়ের পথে। তুমুল হর্ষধ্বনি, ভুভুজেলার পোঁপোঁ, ঢোলের বোল, গাড়ির হর্ন ও গানের সুর মিলিয়ে শব্দব্রহ্মর বিকট নিনাদে কুমিল্লা শহর মুখর। বিশেষত সারা কুমিল্লা পরিণত হয়েছিল ঝলমলে আলোর ঝর্ণাধারায় স্নাত এক মহোউৎসবের কেন্দ্রবিন্দুতে।
মাথায় জাতীয় পতাকার ব্যান্ডবাঁধা, মুখে বাংলাদেশ বাংলাদেশ ধ্বনি, হাতে লাল-সবুজ পতাকা। দু-তিনজন করে একেকটি মোটরসাইকেলে। শুক্রবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে দেখা গেল, কয়েক ডজন মোটরসাইকেল তীব্র শব্দে হর্ন বাজিয়ে চক্কর দিচ্ছে রঙিন আলোয় ভেসে যাওয়া শহরের পথে পথে। ‘আহা, এ কী আনন্দ আকাশে বাতাসে’। তাঁদেরই একজনের প্রতিক্রিয়া, ‘২০ বছরের ঈদের আনন্দের সমান আনন্দ পাইতাছি।’ তাই ক্রিকেট প্রেমীরা আর ঘরে বসে থাকা যায়না। সবাই মিলে কুমিল্লার শহরের প্রাণকেন্দ্র কান্দিপাড়ে এসে জড়ো হয় হাজারো মানুষ। শহরের আনাচে কানাচে বড় পর্দায় বিপিএল এর ফাইনাল খেলা দেখেছেন। ম্যাচ শেষে নেচে গেয়ে উদযাপন করেছেন কুমিল্লার ক্রিকেট প্রেমীরা। এক সমর্থক বলেন, ‘আমরা খুব খুশি। আনন্দে পাগল হয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।’